মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুয়া এক দন্ত চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মো. হাবিবুর রহমান নামে এক রোগীর মুখমন্ডলের উপরিভাগের ১৪টি দাঁত কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে দন্ত অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শনিবার রাতে পুলিশ দন্ত চিকিৎসক শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে।
ভুক্তভোগী মোঃ হাবিবুর রহমান (৬০), শহরের জগন্নাথপুরের কান্দার হাটি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন ইতালি প্রবাসী।
জানা গেছে, দাঁতের চিকিৎসা লাভজনক দেখে বিডিএস ডিগ্রি ছাড়াই দন্ত চিকিৎসক বনে যান শামিমা আক্তার। গড়ে তোলেন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ার নামে একটি দন্ত চিকিৎসালয়। ডাক্তার না হয়েও শহরের নিউটাউন এলাকায় চেম্বার দিয়ে বসেন শামিমা আক্তার। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অসহায় ও সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি একজন ইতালি প্রবাসী। বিদেশ থেকে আসার পর আমার দাঁতে ব্যাথা দেখা দেয়। আমি প্রবাসী হওয়ায় দন্ত চিকিৎসালয় সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা নাই। আমার বাড়ী ও ডাক্তার শামীমা আক্তারের বাড়ী একই এলাকায় হওয়ায় সে আমাকে দন্ত চিকিৎসক বলে নিজেকে পরিচয় দেয়। পরে আমি চলতি বছরের গেল ২৬ আগস্ট তার মালিকানাধীন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ার-এ গেলে সে ডেন্টাল সার্জন বলে আমার নিকট পরিচয় দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে। সেখানে যাওয়ার পর সে আমার ব্যাথাযুক্ত দাঁত পরীক্ষা করে এবং সামনের ৩ টি দাঁতে ছিদ্র করে ক্যাপ পড়িয়ে দেয়। এর বিনিময়ে সে ৯০ হাজার টাকার বিল নেয়। কিছুদিন পর আমি ইতালি চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ইতালি চলে গেলে ঐখানে হঠাৎ একদিন ক্যাপ খুলে যায়। পরবর্তী আমি দেখতে পারি, সে আমাকে অবস করে ৩টি দাঁতের পরিবর্তে আমার ভালো দাঁতসহ ১৪টি দাঁতে ঘষিয়ে ক্যাপ করে দেয়। যা আমি জানতাম না। ক্যাপ খুলে যাওয়ার পরবর্তীতে দাঁতে সমস্যা দেখা দিলে আবারও তাঁর কাছে যাই। তখন আমার দাঁতের মাড়ি সহ ফুলে মুখের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। তখন সে নানান ভাবে আমাকে এই বিষয়ে বুঝানোর চেষ্টা করে। সে আমাকে ভুল চিকিৎসা করেছে আমি বুঝতে পেরে এ অবস্থায় আমি আরেকটি ডাক্তারের কাছে যাই। সেখানকার দন্ত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান যে, পূর্বের ভুল চিকিৎসায় দাঁতে খুব মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এতে আমার ১৪ টি দাঁত হারাতে হয়েছে। পরবর্তীতে আমি তার কাছে এই কর্মকান্ডের বিষয় জানতে গেলে, সে আমাকে বিভিন্ন কথা বলে এবং হুমকি প্রদান করে। আমি আমার অঙ্গহানী ও সঠিক বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করেছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহিন মিয়া বলেন, অভিযুক্ত দন্ত চিকিৎসক শামীমা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।